
কেমন হতো যদি দেখতাম সাড়ে তিন দশক ধরে দু:স্বপ্নে আটকে আছি?
হুট করেই ঘুম ভেঙে নিজেকে আবিষ্কার করতাম আল্পস পর্বতমালার আশেপাশে
তারপর নিজের পালকগুলোকে খুঁটে খুঁটে পরিষ্কার করে উড়াল দিতাম মেঘের উপর দিয়ে।
ঘুরে ঘুরে আকাশে চক্কর কাটতে থাকতাম,
আমার দৃষ্টি থাকত তীক্ষ্ণ ও স্বচ্ছ।
তখন সহসা পেতাম না অমানুষ দেখতে
সংবাদপত্র পড়তে কিংবা বোকাবাক্সে চোখ রাখতে!
খুন ধর্ষণ লুটপাট রাজনীতি সাজনীতি বাজনীতি খাজনীতি
কিংবা লাজনীতি – কিছুই দেখতে হতো না।
উড়তে পারতাম মেঘের উপর দিয়ে
বসে থাকতাম পর্বতের চূড়ায়।
নাহ এ জীবন কেন যেন কোন ঈগলের দু:স্বপ্নচলাকালীন
সাড়ে তিন দশক নয়!
নয় কোন অকারণ দিবাস্বপ্ন কিংবা কল্পনা,
এ তো পুরোই বাস্তব যা অবাস্তব পরাবাস্তব কিছুই নয়।
আজকাল না
ঘুমিয়েও দু:স্বপ্ন দেখি,
যেমন দেখতাম ঠিক এক যুগ আগে।
বিলাসিতা একদম পছন্দ নয়,
তবুও আজ দু:বিলাসিতা রোজকার অভ্যাস।
চোখ খোলা কিংবা বন্ধ থাকলেও অঘোর ঘোর
ঝড় না উঠলেও উড়ে যায় মনের ঘরদোর!
বেঁচে গিয়েছিল যারা মরে গিয়েছে ইতোমধ্যে
ওদের থাকতে হয়না পৃথিবীর নরকবাসে কিংবা প্রেমের যুদ্ধে।
অক্লান্ত চোখে ঘোর লেগে জমেনা আর কালি,
পথেঘাটে কিংবা ঘরে বসে খেতে আর হয়না ধুলোবালি।
হায় জীবন
হায় হৃদকম্পন
হায় শ্বাস
হায় প্রশ্বাস
থেমে যাবে সবই একদিন
সেদিন পূর্ণিমা থাকলেও আর দেখা হবেনা,
অমাবস্যা থাকলেও অন্ধকারে স্বস্তি খুঁজে পাবোনা
বিষাদগ্রস্ত বিকারগ্রস্ত নেশাগ্রস্ত কিংবা আবেগের দাস অপ্রেমিক
হয়ে অন্ধকার খোঁজা লাগবেনা।
সকালের সূর্যালোক দেখে সন্ধ্যা কিংবা রাতের আশু আগমন কামনা করা
লাগবেনা,
খোলা কবরে শুয়ে অমাবস্যায় পূর্ণিমাচন্দ্র দেখতে চাইব না।
তরল কিংবা ধোঁওয়াটে নেশায় উচ্চতর মেঘের দেশে ভাসার কল্পনা আর
আসবেনা,
চোখে ভাসবেনা রঙিন মিথ্যে স্বপ্ন কিংবা কিছু ছোটখাটো আশা।
ভালোবাসা সে তো বহুদূরের আকাশে মেঘের ফাঁকে উঁকি দেয়া গোধূলির এক
চিলতে আলোর রেখা,
ঠিক অমুক সময়ে তমুক জায়গা থেকে দেখতে না পেরে তা হারিয়ে যাবে
প্রতিদিন।
তুমি আমি এক সরলরেখায় কখনই আসব না,
হিসাব নিকেশ করলে বেঁচে থাকার আর প্রয়োজন অনুভূত হবেনা।
প্রার্থনা তবে শূন্যতার কাছে
পূর্ণতাকে দিও না ঠাঁই আমার ভেতরে।
না আসুক ভালো লাগা আশেপাশে
কেননা সুখ সয় না সবার গতরে।
এরচেয়ে নাহয় পাড়ি জমাই মহাশূন্যে,
স্বপ্নগুলোকে বস্তাবন্দী করে কবরে শুইয়ে দিয়ে।।