ঘর স্ত্রী’র চোখে জল রেখেই পরস্ত্রী’র দুঃখ নিয়ে কবিতা
লিখছেন যেই কবি, তার জল ছলছল চোখ দুটো’র মতোই
দিনকে দিন সংবেদনশীল ভাঁড় হ’য়ে উঠছেন একটি রাষ্ট্র।
অনুগ্রহ পূর্বক নাম জানতে চাইবেন না;
বাবার খেয়ে মা’র নামে নিন্দা রটানোর দলভুক্ত আমি নই।
আশা করি আপনারাও তা নন এবং আশা করি উৎকৃষ্ট ঘাসে
শ্বাস ডুবিয়ে চললেও, মস্তিষ্কহীন ঘাস হ’য়ে যাননি নিশ্চয়ই?
মোটের উপর আপনারা আজ সবই বোঝেন।
বাবার দুঃখ মা না-বুঝলে বাকশক্তিহীন সন্তানের কতোটা
কষ্ট হয়, আপনারা তা বোঝেন।
কেবল বোঝেন না— একজন মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলীর
পঙ্গু ভ্যানের চাকারাও আজ ততোটাই দুঃখ বয়!
মনে রাখবেন, (মনে রাখাটা জরুরী) আমি কোনো ভাষণ দিচ্ছি না।
প্রতিশ্রুতি ভরপুর রম্য ভাষণের অধিকার একমাত্র শাসক গোষ্ঠীর,
আমি তা জানি এবং কণ্ঠনালি ছিঁড়ে নেবার সার্বক্ষণিক যে ভয়;
সেটাও উপেক্ষা করছি না।
যদিও আজ বলতে চাই বিশ্বস্ত একটি কুকুর ও তাঁর প্রভুভক্তি নিয়ে।
মহামান্য রাষ্ট্র, আপনি লজ্জা পাবেন না। শুনেছিলাম— শাড়ি খুলবার
ভয় অন্তত বেশ্যার থাকে না; এটা কি তবে সত্যি নয়?
রেগে যাবেন না। এমন চাষাভুষা টাইপ অত্যুক্তির দরুন আমার প্রিয়
চক্ষুদ্বয় উপড়ে নেবেন না; যেহেতু দিন কানারও আছে অন্ধত্বের ভয়!
প্রিয় সুধী, সমাবেত ভাইয়েরা আমার,
(আপনারা সার্কাসপ্রিয় আজন্ম নিরব দর্শক বলেই আমার বিশ্বাস)
আপনাদের চোখ মুখ দেখলে মনে হয়— ওয়াক্ত বয়ে যাচ্ছে;
দরুদ শরীফ ভুলে যাবার দরুন জায়নামাজে ব’সে সালাম ফেরাতে না
পারার মতো গভীর সংকট নিয়ে ব্যস্ত আছে আপনাদের সকাল, দুপুর
আর সঙ্গমপ্রিয় এক একটা মধ্যরাত। যেন সময়টা বেশ সুখের।
যেন দু’হাত তুলে দোয়া ছাড়া কার্যত আর করবার কিছুই নাই।
যেন নিয়তি যখন নির্ধারিতই বৃথাই সব লম্ফঝম্ফ; নষ্ট অপচয়!
অতঃপর ঈশ্বর আপনাদের মঙ্গল করুক;
যদিও নিয়ম মাফিক প্রার্থনার নামে ঈশ্বরকেও খাজনা দিতে হয়!
এবং যদিও এই নিয়ে আপনাদের ন্যায় আমারও বালখিল্য কোনো
খেদোক্তি নাই! রক্তাক্ত স্বপ্ন ও সম্ভ্রমের স্মৃতির কসম
আমি শুধু বলতে চাই
তিরিশ লক্ষ, দুই লক্ষরা নিছকই কোনো সংখ্যা নয়!
“যুদ্ধ, বাঙ্কার, এই কাঁটাতার আর রণাঙ্গনের দৃশ্য পাড় হ’য়ে আমরা
কাল বাঁধবো এমন সংসার, হ্যাঙ্গারে যার গুচ্ছ গুচ্ছ সুখ, ভয়ংকর
আর কোনো স্মৃতিই থাকবে না। আর কোনো ভোরের দৈনিক শরীর
ভ’রে মরিচরঙা দুঃখ ছেপে এসে দাঁড়াবে না তোমারই দোরগোড়ায়।”
এই শর্তে একাত্তরের গনগনে উঠোনে দাঁড়িয়ে
প্রিয়তমার বেদনাঙ্কিত ঠোঁটে প্রতিশ্রুতিশীল চুমু খেয়েছিল বুলেটবিদ্ধ
যেই যুবক; তাঁর জন্য দুঃখ হয়।
খুব দুঃখ হয়। এবেলায় দুঃখ গড়িয়ে মুখ্য হয় হাঙ্গার স্ট্রাইক!
আর ওবেলায় হাঙ্গেরিয়ান মদের গ্লাসে মুখ ডুবতেই— চিয়ার্স!
দেখি স্বপ্নের প্ল্যাটফর্মে প্রিয় বাংলাদেশ, শান্তির ট্রেন চলছে ঝিকঝিক;
মহামান্য রাষ্ট্র/ শয়তান; সব চরিত্র কাল্পনিক! সব চরিত্রই কাল্পনিক?