আবার নালন্দা
শামীম রেজা
অমরত্বেরও মৃত্যু হবে নালন্দা, জোছনার জলজ-অন্ধকারে।
সোমরস পান করে ঈশ্বর নামছেন সোমেশ্বরী জলে
আমি দশমাস আরাধনায় জাইগা থাকবো সোমপুরে,
সোমেশ্বরী থেকে দূরে;
তুমি আসবে তন্দ্রায়, চন্দ্রা নদীর ওপারে;
আমি ঘুম-মন্দিরায় সুর তুলবো বাকি কয়মাস
টেরাকোটার শিল্পিত খোদাইয়ের মাঝে।
পোষ না-মানা পড়শি-সকাল ঝুইলা থাকবে পাকুড়-শাখায়
আমারও ইচ্ছে হীরক-লকেট হয়া ঝুইলা থাকবো
তোমার স্তনের গলিপথে, আরো নিচে আলো-অন্ধকারে।
মধুকর মুখ রাখে গর্ভকেশরে-ঝিঙার কুসুমে;
আমার ঈর্ষা হয় নালন্দা
ঈর্ষায় পুইড়া যায় ভিতরের মৌতাত;
কুয়াশার ঘুম ভাইঙা গেলে, দেখি,
সূর্য ঝুইলা আছে উঠানের আঁড়ায়
ছুঁইতে গেলে হাত পুইড়া যায়
পোড়াগন্ধে নেশা চাপে আমার;
তখন ভিখারির করুণ চোখ দেখলে ক্ষেইপা যাই,
জানি না, আমি কি তোমার কাছে করুণা ভিক্ষা চাই?
ঝাউয়ের পর্দা সইরা গেলে বনটা উধাও;
তুমি পইড়া ফেলবে পাখিছানার মতো ছানাবড়া চোখ আমার।
বারবার ব্যবহৃত হওয়া নদীর কিনারে যাই,
মনে হয় বাদার-জালে আটকে যাওয়া নিশ্চিন্তে হারানো একাকী মাছ।
হননচিন্তা মাথায় চাপে,
সমুদ্রশকুন ওড়ে ঘনিষ্ঠ ঘ্রাণে
কাগুজেপোকা খাইয়া চলে ফুসফুসের প্রিয় অক্ষর
বিষাক্ত ছোবল ছাড়াই ঘায়েল আমি এক জীবিত প্রবাল!
মৃত্যুর সাথে মুখোমুখি কত-কত বার,
এ শরীর শুয়োপোকা হবে
গুবরেপোকায় হবে রূপান্তর
ছাইজ্বলা ধুলা হয়ে উদ্ভিদে দেবে সার,
জাইনাও, নতুন-পুরানো সংরাগে,
জিহবায়-জিহবায় জড়াজড়ি…
শৃঙ্গার-নৃত্যে চন্দ্রায় ঢেউ উঠবে আমার আরাধনায়
তুমি আসবে তন্দ্রায়, চন্দ্রা নদীর ওপারে;
আমি ঘুম-মন্দিরায় সুর তুলবো বাকি কয়মাস
টেরাকোটার শিল্পিত খোদাইয়ের মাঝে।
Original Writer Name:
Shameem Reza