আমার অবিবাহিত স্ত্রী – সরকার মুহাম্মদ জারিফ

ছোটবেলায় বগুড়া শহরের সাতমাথা মোড়ে হঠাৎ হোঁচটে পড়ে গিয়েছিলাম মায়ের হাত ধরে ।

আমার হাঁটুতে সৃষ্টি হয়েছিল ক্ষতচিহ্নের ; যত্ন-অবহেলার অবাক মিশ্রণে দিনকয়েক পর সেখানে মৃদু সোনালি পুঁজ জমেছিল।

তোমরা সপরিবারে ঠিক সেই মৃদু সোনালি রঙের একটা প্রাইভেট কারে এখন এয়ারপোর্টে যাচ্ছ।

আমিও পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছি, আরমেনিয়ানদের কবরে নয়নতারা ফুল আমার মগজে ফোটাচ্ছে বিস্ফোরণ।

একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখি বিষাক্ত ওভারব্রিজের দল বয়ে চলে গেছে ভাঙা টিউবওয়েলের দীর্ঘশ্বাস পেরিয়ে।

হা হা করে একটা প্লাস্টিকের বকুলগাছের মুজোর গন্ধে ভেসে গেছে পেশোয়ার কখনও কাশ্মীর;

গ্যাসের চুলা জ্বলছে, মহল্লায় শিস দিচ্ছে গরুর মাংস, আহা! এতটাই হাহাকার আমাদের এই তল্লাটে ।

তুমি বরং

স্তন পেরিয়ে বুকের ভেতর চিহ্নিত কর ইরানি মুদ্রা, মিসরীয় কার্নিভাল, কানাডিয়ান অশ্লীলতা! তোমার পাশ্চাত্য-প্রাচ্যের মতো দুহাতে লুছনি ধরে মাড় গালো কাশফুলের;

আক্ষেপে আর কতটুকু অভিমান? কতই বা ভাড়া চাইবে স্বেচ্ছানির্বাসন? জানতে চেয়ো না নিঃসঙ্গতার ইস্কুলে তোমার বন্ধু হব কিনা, তার চেয়ে দুটো আলোধোয়া চাপাতিতে মাখন লাগিয়ে বসিয়ে দাও মুহূর্তের ছন্দপতনে। কৃতজ্ঞতা যখন রূপান্তরিত কার্টেসি তখন আমি বরং গোসলে যাই, দুপুর গড়াল ।

আজানের শুরুতে যারা খুব জোরে দৌড়াচ্ছে তাদের হাতে সন্তর্পণে তুলে দিও ছাদের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে লাগানো লেবুগাছের আর্দ্রতা, আর ওই দেখো ওই তো অন্ধকার, আমি ওদিকটাতেই যাচ্ছি।

এয়ারপোর্টে গিয়ে পিয়ানো বা সরোদ শুনে মন খারাপ হবে, তাই মুছে নিও কান্নাবাক্যের খেয়ালশব্দ। ভেবে নিও, জিহ্বার ভেতরে একপাল শহুরে জলহস্তী বিদায়ের বেদনার্ত নদী পার হতে গিয়ে কিশোর কুমার ভেবে একটা যুবক কুমিরের প্রেমে পড়ে গেছে।

প্লেনে উঠবার আগমুহূর্তে … সুতীক্ন পেঁপেগাছটাকে একটা শীতবস্ত্র দিও, যেন তার ছায়া গর্ভবতী হয়ে ধারণ করে তোমাকে।

(Visited 92 times, 1 visits today)

Leave a Reply

Your email address will not be published.